সান্তাহার জংশনে সংঘর্ষ
সেনা সদস্যদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব
বগুড়ার সান্তাহার জংশনে ট্রেনে কর্তব্যরত স্টাফদের সঙ্গে সেনা সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে একটি বিশেষ মহল উঠেপড়ে লেগেছে। ফেসবুক ইউটিউব সহ নানান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢালাওভাবে কিছু পোস্ট প্রচার হচ্ছে। যেখানে এটা প্রমান করার চেষ্টা করা হচ্ছে যে “সেনা সদস্যরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই ঘটনা ঘটিয়েছে।“
একটি বিষয় খেয়াল করলে দেখা যাবে, সবগুলো পোস্টের লেখার ভঙ্গী একই। অর্থাৎ কপি পেস্ট করে পোস্ট করার পর বিভিন্ন জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপে শেয়ার করা হচ্ছে কিছু ফেক আইডি থেকে। সাদা চোখে এই পোস্টগুলো দেখার পরে সাধারণ মানুষের চোখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণা আসবে এটাই স্বাভাবিক।
ঘটনার শুরুটা হয় ট্রেনে কর্তব্যরত টিকেট চেকার এর অবৈধ আবদারের রেশ ধরে। সাপ্তাহিক ছুটিতে বাসায় যাচ্ছিলেন কয়েকজন সেনা সদস্য। টিকেট কাটার সময় না পাওয়াতে ট্রেনেই টিকেট করার সিদ্ধান্ত নেন তারা। চলতি ট্রেনে টিকেট চেকার (টিটিই) আসেন এবং তাদের টিকেট দেখতে চান। সেনা সদস্যরা স্ট্যান্ডিং টিকেট কেটে দিতে বলেন। কিন্তু প্রতি টিকেটের বিপরীতে এক হাজার টাকা দাবী করেন সেই টিটিই।
জেনে রাখা ভালো, স্ট্যান্ডিং টিকেট এর মুল্য সাতশ টাকা।
এরপর সেনা সদস্যরা খুব সাবলীলভাবেই টিকেট চেকারকে জিজ্ঞেস করেন টিকেটের দাম সাত শত টাকা, তাহলে তিনি কেন এক হাজার টাকা দাবী করছেন। এসময় বগীতে উপস্থিত সকলের সামনে সেই টিটিই অপমানসূচক কথা বলতে থাকেন সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্য করে। সেনা সদস্যরা ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে জানতে চান কি কারনে অপমানসূচক কথা বলছেন তিনি। কিন্তু টিকেট চেকার এতে আরও উত্তেজিত হয়ে এক সেনা সদস্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে বসেন। উপস্থিত সকলে এসময় প্রতিবাদ করলে টিকেট চেকার ট্রেন থামিয়ে দিয়ে সকলকে নামিয়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়না। আর তাই টিকেট চেকার এর এই অবৈধ আবদারে সারা না দিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। এতে যেন তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে সেই টিকেট চেকার। উপস্থিত এক বয়স্ক ব্যক্তি তার এই অপকর্ম মোবাইল ফোনের ক্যমেরায় ধারন করছিলেন। সেই ফোন তার হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ভেঙ্গে ফেলেন অভিযুক্ত সেই টিকেট চেকার। এর মধ্যে ট্রেনের আরও কিছু স্টাফ একত্রিত হয়ে সেনা সদস্যদের শারীরিকভাবে আঘাত করার চেষ্টা করে।
আত্মরক্ষার্থে সেনা সদস্যরা তাদের হামলা প্রতিরোধ করে। সরকারি ট্রেনের ভেতরে এমন দুর্নীতির কথা ছড়িয়ে পরে পুরো ট্রেনে। সেনা সদস্যদের অপমান ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করায় উত্তেজিত জনতা ট্রেনের স্টাফদের গণধোলাই করে এবং কিছু অতি উৎসাহী জনতা ট্রেনে ভাংচুর চালায়।
এই ঘটনাটিকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মত একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে একটি কুচক্রী মহল।
ইন্টারনেটে কিছু দেখে বিশ্বাস করার আগে ভালভাবে যাচাই করে নিন। গুজবে কান দিবেন না।