বৃহস্পতিবার   ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ || ১১ পৌষ ১৪৩১

প্রকাশিত : ১০:২৯, ১৪ নভেম্বর ২০২৩

পানি পানের সঠিক সময়

পানি পানের সঠিক সময়

আমাদের মাঝে অনেকেই হয়তো জানেন না, পানি পান করারও সঠিক নিয়ম আছে। সঠিক সময়ে পরিমাণমতো পানি পান না করলে ভুগতে পারেন পানিশূন্যতায়।

বিশেষ করে গরমে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ঘাম ও প্রস্রাবের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যায়। তাই সারাদিনে পর্যাপ্ত পানি পান করা নিশ্চিত করতে হবে এ সময়।

জানলে অবাক হবেন, মস্তিষ্কের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ তরল থাকে? যদি এই মাত্রার চেয়ে পানি কমে যায় তাহলে রক্তনালিগুলো সঙ্কুচিত হয়ে যায়। ফলে স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিশক্তি, মনোযোগের অভাব ও স্ট্যামিনায় কমতে শুরু করে বলে জানা গেছে এক চীনা গবেষণায়।

তাই দিনে পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। আর অবশ্যই সময় মেনে পানি করতে হবে।

এবার জেনে নিন পানি পান করার সঠিক সময় কখন-

ঘুম থেকে উঠে: সকালে ঘুম থেকে উঠে পানি পানি করার অনেক সুফল আছে। সারারাত ঘুমানোর কারণে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে অবশ্যই পানি পান করা উচিত।

ক্ষুধার্ত বোধ করলে: ক্ষুধার্ত বোধ করলেই এক গ্লাস পানি পান করুন। তারপর খাবার খান। অনেকেই তৃষ্ণার্ত হওয়া সত্ত্বেও পানি পান করার তাগিদ অনুভব করেন না। ফলে পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয়। তবে ক্ষুধার্ত বোধ করার সময় আগে পানি পান করলে খাবারও কম গ্রহণ করা হয় আবার শরীরও পর্যাপ্ত পানি পায়।

ঘামলে: যখন আপনি ঘামবেন, তখনিই বেশি করে পানি পান করুন। কারণ ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে অনেকটাই পানি বেরিয়ে যায়। আপনি যদি ওই পানি গ্রহণ না করেন তাহলে পানিশূন্যতার সৃষ্টি হতে পারে।

শরীরচর্চার আগে: বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরচর্চার আগে অন্তত ১৬-২০ আউন্স পানি পান করা জরুরি। আর শরীরচর্চা করার ফাঁকে ১০-১৫ মিনিট পরপর ৬-১২ আউন্স পানি পান করতে হবে।

অসুস্থবোধ করলে: হঠাৎ অসুস্থবোধ করলে কিংবা বিভিন্ন অসুখে ভুগলে অবশ্যই পরিমাণমতো পানি পান করতে হবে। তাহলে শরীর দ্রুত সুস্থততা লাভ করবে। এর পাশাপাশি অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। কারণ এগুণো শরীরকে আরও পানিশূন্য করে তোলে।

পিরিয়ড চলাকালীন: মাসিকের অস্বস্তি কাটাতে অবশ্যই পিরিয়ডের আগে প্রচুর পানি পান করতে হবে। তাহলে পেটের ফোলাভাব, ক্র্যাম্প বা মাথাব্যথার লক্ষণে কষ্ট পাবেন না।

ডিসমেনোরিয়ায় আক্রান্ত অল্পবয়সী নারীদের ওপর করা এক সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঋতুস্রাবে ভোগেন এমন নারীরা বেশি পানি পান করলে পেলভিক ব্যথা থেকে নিস্থার পাবেন।

দুপুরে: ব্রিটিশ জার্নাল অব নিউট্রিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, দুপুরে অনেকেই ক্লান্ত বোধ করে কফির কাপে চুমুক দেন। এর পরিবর্তে যদি এক গ্লাস পান করেন তাহলে শরীরে মিলবে অ্যানার্জি ও আরো সতেজতা বোধ করবেন। শরীরে আর্দ্রতা বজায় থাকলে মেজাজ ও স্মৃতিশক্তিও ভালো থাকে।

মাথাব্যথা করলে: মাইগ্রেনের অন্যতম প্রধান কারণ হলো ডিহাইড্রেশন। আপনি যদি মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন তাহলে অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি পান করা নিশ্চিত করুন।

খাওয়ার আগে: সব সময় খাবার খাওয়ার আগে পানি পান করুন। এতে ওজনও ঝরবে আবার শরীরও সুস্থ থাকবে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, খাবারের আধা ঘণ্টা আগে আধা লিটার করে পানি পান করার অভ্যাস ১২ সপ্তাহে ৩ পাউন্ডেরও বেশি ওজন ঝরাতে পারে।

অন্য এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত ওজনের ৫০ জন নারী সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার ও রাতের খাবারের আধা ঘণ্টা আগে প্রায় ২ কাপ পানি পান করেন, তারা ডায়েটে অন্য কোনো পরিবর্তন করেননি। ৮ সপ্তাহ পরে দেখা যায়, তারা অনেকটাই ওজন ঝরিয়েছেন।

দিনে কতটুকু পানি পান করবেন?

ইউএস ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেডিসিনের তথ্যমতে, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে পুরুষদের জন্য দিনে ১৫.৫ কাপ ও নারীদের জন্য ১১.৫ কাপ পানি পান করা আবশ্যক। এর পাশাপাশি তরল খাবার ও প্রাকৃতিক ফলের রস শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে দারুন উপকারী।

সূত্র: ডেইলি-বাংলাদেশ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

সর্বশেষ