খিঁচুনি রোগের অব্যর্থ মহৌষধ কাউ বা কাউফল
আমাদের গ্রামেগঞ্জে মানুষ কমবেশি কাউফলের সঙ্গে পরিচিত। কাউ (mangosteen) বা ম্যাঙ্গোস্টিন এটি মাঝারি আকৃতির বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Garcinia cowa Roxb বা Garcinia kydia Roxb। এর অন্যান্য নাম হলো- কাউয়া, কাগলিচু, তাহগালা, ক্যাফল, কাউ-গোলা ইত্যাদি।
এই গাছের ডালপালা কম, উপরের দিকে ঝোপালো। গাছের রং কালচে। সাধারণত জঙ্গলে এই গাছ দেখা যায়। গাছে ফুল ধরে ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে। আর ফল পাকে জুন-জুলাই মাসে। ফল গোলাকার, অনেকটা টেবিল টেনিস আকৃতির কিন্তু খাঁজযুক্ত। কাঁচা অবস্থায় সবুজ ফল ও পাকলে কমলা বা হলুদ হয়। ফলের ভেতর চার-পাঁচটি দানা থাকে। দানার সঙ্গে রসালো ভক্ষ্য অংশ থাকে, যা চুষে খেতে হয়।
কাউ খেলে দাঁতে হলদেটে কষ লেগে যায় বলে ফলটি জনপ্রিয় নয়। ফলের আকার লিচুর সমান বা সামান্য বড় হয়। বীজযুক্ত এসব দানা রসালো ও মুখরোচক। ফল হিসেবে সরাসরি খাওয়া ছাড়াও জ্যাম-জেলি করেও সংরক্ষণ করা যায়। কাউ গাছের কষ থেকে রং ও বার্নিশ তৈরি হয়। এর বাণিজ্যিক আবাদ নেই। তবে কাউফলের বেশ চাহিদা রয়েছে বাজারে। পাকা কাউফল কেজি প্রতি ৭০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
এই গাছ বাংলাদেশ সহ ভারত, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ চীন, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে দেখা যায়। বাংলাদেশে সিলেট, মৌলভীবাজার, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে কাউফলের দেখা মেলে বেশি। উপকূলীয় অঞ্চলে নার্সারিতে কাউফলের চারা উৎপাদনও করা হয়। কাউফল ভিটামিন সি- এর ভাল উৎস। ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল শোষণের মানব দেহের ভাইরাল-ফ্লু বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বিকাশ ও ক্ষতিকর, প্রো-উদ্দীপনাময় ফ্রি-মৌল ময়লা সাফ করতে সাহায্য করে। এছাড়া কাউ গাছ ভেষজ ঔষধও হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
কাউ গাছের ভেষজগুণ
১। কাউ গাছের ছাল সিদ্ধ এই ক্বাথ সকাল বিকেল করে সেবন করলে খিঁচুনি রোগ ভালো হয়।
২। কাউ গাছের ফল খেলে আমাশয় দ্রুত ভালো হয়।
৩। মাথা ব্যথা হলে কাউ গাছের ফল খেলে দ্রুত ভালো হয়।
৪। হঠাৎ করে মুখে অরুচি দেখা দিলে অরুচি ভাব দূর করার জন্য কাউ গাছের ফল খেলে মুখে রুচি ফিরে আসে।
৫। ঠান্ডা জনিত সমস্যা দেখা দিলে সকাল বিকেল কাউ গাছের ফল খেলে উপকার পাওয়া যায়।
৬। কেউ অপুষ্টি জনিত সমস্যায় ভুগলে কাউ গাছের ফল খুব উপকারী।
সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ