জ্বর, ঠান্ডা ও কাশি হলে ভরসা রাখুন সর্পগন্ধায়
সর্পগন্ধা আমাদের অনেকের পরিচিত একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এটি ঔষধি গুণের জন্য বিখ্যাত। অনেকেই একে চন্দ্রা নামে ডেকে থাকে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Rauwolfia serpentina। এই উদ্ভিদটি সব জায়গায় জন্মায় না।
আমাদের দেশের খাসিয়া পাহাড়ের পাদদেশ, তামাবিলের জঙ্গল এবং রাঙামাটি, বান্দরবান এলাকায় কিছু কিছু দেখা যায়। এই গাছটি সাধারণত ঝোপ আকারের হয়ে থাকে। গুল্মজাতীয় এই উদ্ভিদটির পাতা ছোট এবং লম্বা আকৃতির হয়ে থাকে। সাধারণত এর শিকড় ও পাতা ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অনেক প্রাচীন শাস্ত্রেও এর গুণের কথা পাওয়া যায়। আসুন জেনে নিই সর্পগন্ধা উদ্ভিদের ঔষধি গুণাগুণ।
রাসায়ানিক উপাদান:
এই গাছে স্টেরল, অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড, অলিক অ্যাসিড, ফিউমারিক অ্যাসিড, গ্লুকোজ, রেজিন, খনিজ লবণ, স্টার্চ ইত্যাদি পাওয়া গেছে। যা চিকিৎসা ক্ষেত্রে খুব উপকারী ভূমিকা রাখছে।
সর্পগন্ধা উদ্ভিদের ঔষধি গুণাগুণ:
১. জ্বর, ঠাণ্ডা-কাশি প্রতিষেধক হিসেবে সর্পগন্ধা ব্যবহার করা হয়। দৈহিক দুর্বলতা ও মানসিক অবসাদজনিত রোগেও এর মূলের চূর্ণ ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও হাইপারটেনশন, ইনসমোনিয়া, বাতজ্বর এবং ব্যথা-বেদনায় সর্পগন্ধার মূলচূর্ণ অনেক কার্যকরী।
২. বিভিন্ন সরীসৃপ বা পোকামাকড় কামড়ালে ক্ষত ও জ্বালা পোড়া থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রতিষেধক হিসেবে সর্পগন্ধা ব্যবহার করা হয়।
৩. সর্পগন্ধার শিকড় ও পাতার রসে আছে অ্যালকালয়েডস, যা আমাদের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও মানসিক বিকারগ্রস্ততা, হিস্টেরিয়া রোগ উপশমে সর্পগন্ধার ব্যবহার হয়। দুধের সঙ্গে এর শিকড় চূর্ণ মিশিয়ে দিনে তিনবার সেবন করলে হিস্টিরিয়া রোগীও সুস্থ হয়।
৪. সর্পগন্ধা পাতার নির্যাস চোখের ছানি কাটাতে সাহায্য করে। কোন বিষাক্ত পদার্থ কিংবা যে কোন ধরনের বিষক্রিয়া থেকে রক্ষায় সর্পগন্ধা গাছের এ্যালকালয়েডসসমূহ অ্যান্টিডট হিসেবে কাজ করে।
৫. বিভিন্ন প্রকার চর্মরোগ নিরাময়েও এর ঔষধ কার্যকর। বার্ধক্যজনিত রোগও এটি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে তারা রাতে ঘুমানোর আগে ০.২৫ গ্রাম সর্পগন্ধার শিকড়ের গুঁড়া খেতে পারেন। আর যারা ঘুমের ক্ষেত্রে খুব সংবেদনশীল তারা সকালে ও রাতে দুবার খেতে পারেন।
সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ