।। অলৌকিক মার্চ।।
ক্যালেন্ডারের একটি কিংবা দুটি পাতা উল্টালেই
চলে আসে মার্চ!
মার্চ চলে আসে মার্চ করতে করতে -
লেফট্ রাইট লেফট্
লেফট্ রাইট লেফট্
এমনতর মাস
এমন ক্ষণজন্মা, সার্থক মাস
দেখেছিলো কে কবে পৃথিবী জন্মের পরে?
এই ব-দ্বীপ দেশ, যার নামের আদ্যক্ষরও 'ব',
এই পাললিক জাতি ছাড়া
আর কোন পরাক্রমশালী দেশ,
আর কোন জাত্যাভিমানী জাতির
জাগতিক আকাশে ঘটেছিলো একটি মাসে
চার-চারটি মহাজাগতিক বিস্ময়? -
সতেরো!
সাত!
পঁচিশ!
ছাব্বিশ!
মার্চের সতেরোয় ভূমিষ্ঠ একটি শিশুর
জন্ম-মাস একটি জাতির জন্মের সাথে
হয়ে যাবে একাকার,
সেই শিশুর জন্ম-ক্রন্দন হয়ে যাবে
একটি জাতির জন্ম-ক্রন্দন একই মার্চে -
কেউ দেখেছিলো কি কখনো নিষ্পলক স্ফটিক-গোলকে?
সতেরোই মার্চের সেই নগণ্য শিশু
ক্রমাগত বেড়ে ওঠার সময়, জানিনা -
কবিতা লিখতো কিনা।
অথচ সাতই মার্চে সেই তিনিই
সটান দাঁড়িয়ে শালপ্রাংশু,
উদ্যত তর্জনীর অননুকরণীয় মুদ্রায়,
মানুষে মানুষে একাকার ময়দানে,
অনন্য স্বভাব-কবির অকম্পিত ছন্দে,
মস্তিষ্ক নয়, হৃদয়ের অলিন্দ থেকে
আবৃত্তি নয়, বজ্র নির্ঘোষে ঘোষণা করলেন
পঙতির পর পঙতি,
মুক্তির কবিতা!
এমন কবিতা কেউ শুনেছে কি কবে?
এমন কবিতা কেউ শুনবে কি আর?
মার্চের পঁচিশে রাতের নিকষ কালো পর্দা
নিমেষে রক্ত-লাল, টকটকে থেকে কালচে
জমাট বাঁধার আগেই প্রলেপ নতুন রক্তের!
এক রাতে নিরস্ত্র রক্ত এতো দেখেছে কি কেউ?
শুনেছে কি ছিন্নভিন্ন এত আর্তনাদ আহাজারি?
পৃথিবীর জঠরে ধুলোমাখা রক্তের ভেতর
হয়েছিলো নিষিক্ত এক নতুন ভ্রূণ।
সূর্য কি ভেবেছিলো কখনো মার্চের ছাব্বিশে,
এই অনার্য জাতিকে দেখাবে
একটি নতুন আকাশের ছাদওয়ালা নতুন ঠিকানা?
মার্চ ভাবেনি নিশ্চিত -
মার্চেই ঘটে যাবে পৃথিবীর ইতিহাসের
চার-চারটি মহাজাগতিক বিস্ময় -
একটি জাতির সতেরো-সাত-পঁচিশ-ছাব্বিশ মার্চ!
নিশ্চিত এমনটি ঘটবেনা অলৌকিক আর!
দৈনিক গাইবান্ধা